সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ট্রলার

পান চিবাইতে চিবাইতে আব্দুর রহমান বাড়ি ফিরে। দুপুরে খাবারের পর সে নিয়ম করে ঘর থেকে বাইর হয়, তা যতই বৃষ্টি হোক কিংবা ঠাডা পড়া রোদই হোক না কেন, রশিদের দোকান থেকে সে পান কিনে, হালকা জর্দা দেয়া, একটু চুন সাথে সুপারি দেয়া অর্ধেক পান খাবে সে এবং শেষ পিকটা ফেলবে সে তার বাড়ির দরজার পাশের দেয়ালে আর এভাবেই ঐ দেয়ালটার নিচের সম্পূর্ণ অংশ সবসময় লাল হয়ে থাকে। আব্দুর রহমান চল্লিশোর্ধ্ব, কোন কারনে সে এলাকায় গরুর ব্যাপারী হিসেবে পরিচিত, তাকে সবাই আব্দুর রহমান বেপারী ডাকে, তবে লোকে তাকে কেন গরুর ব্যাপারী ভাবে সে আজো ঠাওর করতে পারেনা, কোনদিন ঘোর লাগা এক বর্ষার রাতে সে কলিমুদ্দি ব্যাপারীর সাথে তাস খেলতে খেলতে হয়তো গরুর বেপার নিয়ে দুই একটা কথা বলছিল তাতেই কি লোক তাকে ব্যাপারী নাম দিল নাকি তা নিয়ে সে প্রায়ই ভাবে এবং ভাবতে ভাবতে কোন কুল কিনারা না করতে পেরে মাছের ট্রলার আজো কেন ফিরল না সেটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়। আব্দুর রহমানের আসল কাজ মিয়া বাড়ির আটটা ট্রলার দেখা শোনা করা, এবং এই এলাকায় যে আর কারো দুই একটার বেশি ট্রলার সে বাড়তে দেয়না এইটা জানার কারণে মিয়া বাড়ির বড় মিয়া তাকে বেশ স্নেহ করে আর এই স্নেহ মাঝে মধ্যে বাড়াবাড়ির রকম পর্যায়ে চলে যায় বলে মিয়া বাড়ির অন্যান্য লোকেরা তাকে দেখতে পারেনা, এই ব্যাপারটা আব্দুর রহমান বেশ উপভোগ করে, সে নিজেকে ততোধিক গুরুত্বপূর্ণ লোক মনে করে এবং অল্প অল্প বাতাসের দিনেও গলায় মাফলার ঝুলায়। ্মাফলার ঝুলানোর মহত্ব এই এলাকার লোকেরা বুঝবে না বলে আব্দুর রহমানের বিশ্বাস এবং এইটা যে শহরের লোকদের কায়দা-কানুন সেটা সে ভালভাবেই জানে।

শীতকালের এই সময়টা বোবার হাঁটে মেলা বসে, পৌষ মাসের মেলা। নানা জায়গা, নানান ঘাটের লোক এক হয়, বাতাসা-মুড়ি-মুড়কি-পোলাপাইনের খেলনা, আবিয়াইত্তা মাইয়াগো পুতুল আরো কত কী। আর সন্ধ্যার সময় বসে ঝুমুর-নূপুরের ড্যান্স শো। ঝুমুর-নূপুর বোবার হাঁটে গেল দুই বছর ধরে আসছে, এলাকার লোকজন তাদের উত্তাল নাঁচ দেখতে সারাদিন অপেক্ষা করে। এই উপলক্ষে মেলা জমে, জমজমাট হয়। আব্দুর রহমান বিঁড়ি ফুঁকতে ফুঁকতে ঝুমুর আর নূপুরকে এক ঝলক দেখতে পাওয়া যায় কিনা সেই ধান্দা করে। গত বছর ঝুমুরের সাথে রাতে থাকা গেলেও নূপুর কিছুতে রাজি না হওয়ায় আব্দুর রহমানের পিপাসাটা রয়ে গেছে, নূপুরকে আব্দুর রহমানের আরো দেমাগি মনে হল, খুব রঙ-ঢঙ করে সে পাছা নাচাতে নাচাতে আব্দুর রহমানের পাশ দিয়া হেঁটে যায়। আব্দুর রহমান বুকের দিকে এক পলক তাকানোর সুযোগ পায়, ঝুমুরের থেকে বড় মনে হয়, মনের ভেতর দীর্ঘশ্বাসটা বাড়ে, পুরুষ জেগে উঠে। ঝুমুর-নূপুর নাচ শুরু করবে এমন সময় মিয়া বাড়ির বড় ছেলে তার ঘাড়ে দুই আঙুল দিয়ে চিবি মারে পেছন থেকে, আব্দুর রহমানের গলা শুকিয়ে আসে। সে ঘাড় ঝুকিয়ে, মাথা নিচু করে সালাম দেয়। মিয়া বাড়ির বড় ছেলে সেলিম মিয়া তাকে মনে করিয়ে দেয় একটা ট্রলার আজকে ফেরে নাই যার খোঁজ সে আব্দুর রহমানকে দিয়েছিল। আব্দুর রহমান সাথে সাথে বোবার হাট থেকে নদী ঘাটের দিকে পা বাড়ায়। নদীর ঘাটে পৌছাতে পৌছাতে সে দেখতে পায় মাছের পাঁচটা  ট্রলার  আর যাত্রীবাহী তিনটা ট্রলার ঘাটে ভেরানো। আব্দুর রহমান ভড়কে যায়, সে তার ঘাড়ের পিছে সেলিম মিয়ার নাকের গরম নিঃশ্বাস অনুভব করে। সেলিম মিয়া তাকে যাত্রীবাহী একটা ট্রলার স্টার্ট দিয়ে অপেক্ষা করতে বলে। আব্দুর রহমান ভড়কে গেলেও জানে আর কিছু করুক সেলিম মিয়া তাকে মারার সাহস করবে না। সেলিম মিয়া ট্রলারে না উঠে ঘাটে বিড়ি ফুঁকতে থাকে। রাত বাড়ে, শীতের রাত, কুয়াশার কারণে কিছুই দেখা যায়না, দুই হাত দূরের জিনিসও আবছা মনে হয়। আব্দুর রহমান এমন শীতেও ঘামে, বগল ঘামা অনুভব করে, মাফলার কোমরে বাঁধে, শার্টের পকেট থেকে পান বের করে মুখে দেয়।

গভীর রাতে তিনজন মানুষকে দূর হতে আসতে দেখে সেলিম মিয়া, সে সামনে এগোয়। সামনের তিনজন ট্রলারে কে আছে দেখতে পায়না কুয়াশার কারণে, ট্রলারে থাকা আব্দুর রহমানও বুঝেনা সেলিম মিয়া হঠাৎ কোথায় গেল। একটা গুমোট ভাব চারিদিকে, আকাশের মেঘগুলো সরে সরে যাচ্ছে। আব্দুর রহমান কিছুক্ষণ পর চুরির রিনিঝিনি শব্দ শুনতে পায়, বাতাসে ভেসে আসে মিষ্টি গন্ধ,মেয়েলি কন্ঠ শুনতে পায়, একটা না, দুইটা। সেলিম মিয়া গলা খাঁকারি দিয়ে উঠে, বলে বেপারি নৌকা ছাড়, দুইটা মেয়ে মানুষ হিহি করে সশব্দে হেসে ওঠে অকারণে। সেলিম মিয়া পর্দা টানে ট্রলারের বসার জায়গাটাতে, পর্দার মত করে সেখানে বড় চাঁদর দেয়া। পাটি বেছানো তক্তার উপর সেলিম মিয়া তিনটা গ্লাস সাঁজায়। আব্দুর রহমান পর্দার আড়াল থেকে দেখে, ঝুমুর-নূপুর , হারিকেনের আলোয় দুইজনের মুখ দেখা যাচ্ছে, সেলিম মিয়া একজনের কোলে মাথা দিয়ে আরেকজনের মুখে গ্লাস তুলে দিচ্ছে, পাশে বোতল দেখে আব্দুর রহমানের জিহবা শুকিয়ে আসে, সে গলা খাঁকারি দেয়। সেলিম মিয়া চিৎকার দিয়ে বলে- 'বেপারি তুমি মন খারাপ কইরো না, তোমারেও দিমু'। এরপর আবার হিহি হাসি, অকারণে হেসে উঠে ঝুমুর-নূপুর।

আব্দুর রহমান ট্রলার বেশিদূর নেয়না, সে ঘুরায় ফিরায় ট্রলারটাকে ঘাটের কাছাকাছি রাখার চেষ্টা করে, শীতের মৌসুম, কোথায় না কোথায় চর জেগে উঠেছে কে জানে, এর মধ্যে আবার সেলিম মিয়ারও বিশ্বাস নাই, মাল খাওয়া শেষ হলেই বলবে - বেপারি ঘাটে নৌকা লাগাও। ট্রলার হেলতে থাকে, দুলতে থাকে, আব্দুর রহমান এখন আর পর্দার আড়াল থেকে কিছুই দেখতে পায়না, সেলিম মিয়া হারিকেন বন্ধ করে দিছে, ঝুমুর-নূপুরের রিনরিনে গলার স্বর পাওয়া যায়, আর একজন একজন করে হেসে উঠে একটু পরপর। আব্দুর রহমানের তন্দ্রা আসে, সে ট্রলারের নিয়ন্ত্রন ছাড়েনা, হাল ধরে বসে থাকে। আব্দুর রহমানের কখন ঘুম চলে আসে সে জানেনা। ঘুম ভাঙে গোঙানির শব্দে, চোখ মেলে দেখতে পায় ভোরের আলোয় মাথার উপর দিয়ে নাম না জানা পাখি উড়ে যায়। গোঙানির শব্দে হাল ছেঁড়ে নিচে নামে। দেখে সেলিম মিয়া আর ঝুমুর জড়াজড়ি করে শুয়ে আছে, নূপুর বেপারি বলে নিচু স্বরে ডেকে উঠে। নূপুর অনাবৃত শরীরে সেলিম মিয়াকে ডাকে কিন্তু সেলিম মিয়া সাড়া দেয়না, বেপারিকে দেখে হেসে উঠে নূপুর, বলে- 'ভিত্রে আসেন', বেপারি ট্রলারের স্টার্ট বন্ধ করে দেয়, পর্দা সড়িয়ে এতক্ষণে রক্ত দেখতে পায়, মূলত সেলিম মিয়া আর ঝুমুর এখন মৃত, দুজনেরই গলার কাছে রক্ত জমাট হয়ে আছে, গোঙানির শব্দ এতক্ষনে পরিষ্কার হয় আব্দুর রহমানের কাছে। নূপুর বের হয়ে আসে ভেতর থেকে, অপরিষ্কার ভোরের আলোয় সে বেপারীকে নিজের ফাঁদে ফেলতে সমর্থ হয়, বেপারী ট্রলারের তক্তায় শুয়ে পড়ে, নূপুর তার ওপর চড়ে বসে। শীতের সকালে নূপুরের শরীর অনেক বেশি ঠান্ডা মনে হয় আব্দুর রহমানের কাছে, পিঠটা অনেক বেশি শক্ত মনে হয়। আব্দুর রহমান চোখ বন্ধ থাকা অবস্থায় টের পায় তার গলায় ঠান্ডা দাঁতের কামড়, দাঁতের কামড়ে তার গলার রগ ছিড়ে ফেলতে চায় নূপুর, আব্দুর রহমান বাঁধা দিতে চাইলেও পারেনা, কী যেন একটা সম্মোহনী শক্তি তার পুরুষাঙ্গ চেপে ধরে, তার চোখ বন্ধ হয়ে আসে, শেষ মুহূর্তে সে অনুভব করে গলা থেকে ফিনকি দেয়া রক্ত, আস্তে আস্তে রক্তের গরমে পৌষের শীতে আবারও ঘাম ছুটে আব্দুর রহমান বেপারীর।

সকালে বোবার হাঁটে বরাবরের মত মেলা বসে, পৌষ মাসের মেলা। নানা জায়গা, নানান ঘাটের লোক এক হয়, বাতাসা-মুড়ি-মুড়কি-পোলাপাইনের খেলনা, আবিয়াইত্তা মাইয়াগো পুতুল আরো কত কী। লোকজন জানতে পারে সেলিম মিয়া ঝুমুর-নূপুরকে নিয়া নিরুদ্দেশ যাত্রা করেছে, সাথে নিয়া গেছে বাপের একটা ট্রলার। লোকজন আব্দুর রহমানের বাড়িতে ধীরে ধীরে ভিড় করে। তাদের ভিড় জমানো দেখে আব্দুর রহমানের বউ খেকিয়ে উঠে, সে বলে তার স্বামী ট্রলারে করে কোথাও যায় নাই, বরঞ্ছ একটা নিখোঁজ ট্রলারের খোঁজেই সে দুপুরে বের হয়ে গিয়েছিল আর ফেরেনি। মিয়া বাড়ির বড় মিয়া আসে লুঙ্গি উঁচা করে, সে এসে কথা বলেনা। বিশ্বস্ত আব্দুর রহমান আর নিখোঁজ ট্রলারের দায় সে তাঁর সুপুত্র সেলিম মিয়াকেই দিবে কিনা ভেবে বিভ্রান্ত হয়, সে মনের কথা মনেই লুকিয়ে রাখে, মুখে বলে ট্রলার চুরি হয়েছে এবং আব্দুর রহমান যদি বাড়ি ফিরে তবে যেন তাঁর সাথে দেখা করে, ট্রলার দেখা শোনায় আব্দুর রহমান আর আগের মত মনোযোগী না -এই বলে সে একদলা কফ ফেলে নিজের বাড়ির দিকে পা বাড়ায়। এলাকার লোকজন বড় মিয়ার কথা শুনে আশ্বস্ত বোধ করে, তারা ভাবতে থাকে সেলিম মিয়া ঝুমু-নূপুরকে অন্য কোথাও নিয়ে খুব মজা করতেছে আর নিশ্চয়ই এতদিনে ট্রলার বেঁচে খাইছে। আর বেচারা আব্দুর রহমান নিশ্চয়ই ট্রলার খুঁজতে খুজঁতে কোথায় না কোথায় না খেয়ে মরছে। কয়েকমাস যায় এভাবে, আব্দুর রহমান বিধ্বস্ত বদনে এলাকায় ফিরে আসে, আর ফিরে এসে লোকজনের কাছে তার হারানো মাফলারের জন্য আফসোস করতে থাকে, বড় মিয়াকে সে সবকিছু সত্য সত্য বলে- বলে, সে শুনতে পেরেছে সেলিম মিয়া সন্দ্বীপের কোন এক গ্রামে ঝুমুর-নূপুর দুইজনকেই একসাথে বিয়ে করেছে, ট্রলার বেঁচার টাকায় সে সেখানে খুব মজা-মাস্তি করে বেড়াচ্ছে। আব্দুর রহমান এক জংগল দাড়ি-গোফ-চুল কাটিয়ে বাড়ি ফিরে, বউকে বলে কাপড় চোপর গোঁছাতে , বউকে সে এই বলে আশ্বস্ত করে যে, সে নতুন ব্যবসা খুলেছে কুতুবদিয়ায়, ট্রলার কিনেছে নতুন, ট্রলারের ব্যবসার কারণে এতদিন বাড়ি ফিরতে পারে নাই, এখন তাদের এখান থেকে চলে যেতে হবে। আব্দুর রহমান রাত বাড়তেই রওনা দেয়, বঊকে তার নতুন কেনা লাল মাফলারটা দেখায় আর বলে আগের মাফলারটা অনেক বেশি টেকসই ছিল।


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

দক্ষিণ মৈশুন্দি কিংবা ভূতের গলিতে মোহাম্মদ শহীদুল হক সাবের সাথে (3)

কোথায় পাব তারে  মোহাম্মদ শহীদুল হক সাব ৯-৫টা চাকরি করেন। ৫টার একমিনিটও বেশি সময় তিনি অফিসে দিতে চান না,যদিনা কেউ তার বিপরীত পাশের চেয়ারে বসে না থাকে। উঁনার বিভাগের উঁনি উর্ধ্বতন কর্মকর্তা হওয়ায় কাজের গতি ও সময় নির্ধারণ উঁনার হাতেই বর্তায়। আমরা বলতে পারি এই ৯-৫টার মধ্যকার এক ঘন্টা সময়ও উঁনি নষ্ট করেন না, বাইরের অনাকাঙ্খিত কেউ আসলে প্রবেশমুখে পিওন আঁটকে দেয়, বলে দেয় স্যার অফিসে নেই। এটা মোহাম্মদ শহীদুল হক সাব ইচ্ছা করেই করেন; না বলে আমরা বলতে পারি এটা তার অভিজ্ঞতা ও পেশা গত দক্ষতা যে উঁনি উটকো লোক এড়িয়ে চলতে পারেন, আর যেহেতু সরকারি চাকরি তাই এখানে ভোক্তা সন্তুষ্টি বা আম জনতার সাথে সম্পর্ক রাখারও কিছু নেই, প্রাইভেট কোম্পানিতে যেভাবে ক্লায়েন্ট সার্ভিস বা অন্যান্য যোগাযোগ মেনে চলার একটা দায় বর্তায়, সরকারি চাকরিতে এসব থাকে না। প্রতি সোম  আর বুধবার মন্ত্রী মহোদয়ের সাথে বিভাগীয় প্রধান, সচিবসহ অন্যান্যরা মিটিং করেন রুটিন অনুযায়ী।  মোহাম্মদ শহীদুল হক সাব সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে তাঁর পিতৃ নিবাসে চলে যান, এখানে উঁনি আর কাজের লোক শাহ আলম ছাড়া কেউ থাকে না, শাহ আলম উঁনার ব্যক্তিগত গাড়ি চালকও বট

দক্ষিণ মৈশুন্ডি কিংবা ভূতের গলিতে আমরা কয়েকজন একা একা মানবেরা (5)

৫। ভাদাইম্যা মিজান শেফালিকে দূর থেকে দেখে মকবুলের মা , কাছে আসতেই বলে -‘ উদলা হয়া গেছিলা কই ? মাইয়্যা মানুস ঘোমটা ছাড়া ঘর থন বাইর হয় নিকি ?’ শেফালি বিব্রত হয় , ভুলে যায় শাশুড়ির কথা । মকবুলের মা বলে উঠে -‘ তোমার চলন বলন আরো ঠিক কর বউ , আমার পোলা সামনের বছর হজ্বে যাইব নিয়ত করছে , হাজ্বি সাবের বিবি তুমি , ঠিক কইছি না !’ শেফালি ঘাড় নেড়ে সম্মতি দেয় । আসলেই শেফালি তো এখন সাহেরা আপার বান্ধা কাজের মেয়ে না , এই বাড়ির বউ । মকবুল এই এলাকার নামিদামি মানুষদের একজন । সে প্রথম প্রথম বুঝতে পারে নাই , এখন যখন আসে পাশে যায় , প্রতিবেশিদের সাথে মিশে তখন জানতে পারে সবাই , বিশেষ করে কসাইভিটা , লালবাগ , জিঞ্জিরা এলাকার লোক মকবুলকে কত মান্য করে । কসাইভিটার প্রত্যেক ঘরে ঘরে মকবুলের কৃতজ্ঞতার জন্য দোয়া করা হয় , ঘরে ঘরে মকবুলের দেয়া কিছু না কিছু থাকে । শেফালি শুনে আর অবাক হয় , নিজেকে ভাগ্যবান ভাবে । আমি ভাদাইম্যা মিজান , সারাদিন টো টো কইরা ঘুরি দেইখা আমার এই নাম । পুরা দক্ষিণ মৈশুন্ডি আর ভূতের গলিতে আমারে সবাই চিনে এই নামে । আমার এই নামের পেছনে যদিও কোন তাৎপর্য নাই কিন্তু তারপরও লোকে ব্যাখ্য