সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

দক্ষিণ মৈশুন্দি কিংবা ভূতের গলিতে মোহাম্মদ শহীদুল হক সাবের সাথে (3)

কোথায় পাব তারে 


মোহাম্মদ শহীদুল হক সাব ৯-৫টা চাকরি করেন। ৫টার একমিনিটও বেশি সময় তিনি অফিসে দিতে চান না,যদিনা কেউ তার বিপরীত পাশের চেয়ারে বসে না থাকে। উঁনার বিভাগের উঁনি উর্ধ্বতন কর্মকর্তা হওয়ায় কাজের গতি ও সময় নির্ধারণ উঁনার হাতেই বর্তায়। আমরা বলতে পারি এই ৯-৫টার মধ্যকার এক ঘন্টা সময়ও উঁনি নষ্ট করেন না, বাইরের অনাকাঙ্খিত কেউ আসলে প্রবেশমুখে পিওন আঁটকে দেয়, বলে দেয় স্যার অফিসে নেই। এটা মোহাম্মদ শহীদুল হক সাব ইচ্ছা করেই করেন; না বলে আমরা বলতে পারি এটা তার অভিজ্ঞতা ও পেশাগত দক্ষতা যে উঁনি উটকো লোক এড়িয়ে চলতে পারেন, আর যেহেতু সরকারি চাকরি তাই এখানে ভোক্তা সন্তুষ্টি বা আম জনতার সাথে সম্পর্ক রাখারও কিছু নেই, প্রাইভেট কোম্পানিতে যেভাবে ক্লায়েন্ট সার্ভিস বা অন্যান্য যোগাযোগ মেনে চলার একটা দায় বর্তায়, সরকারি চাকরিতে এসব থাকে না। প্রতি সোম  আর বুধবার মন্ত্রী মহোদয়ের সাথে বিভাগীয় প্রধান, সচিবসহ অন্যান্যরা মিটিং করেন রুটিন অনুযায়ী। 

মোহাম্মদ শহীদুল হক সাব সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে তাঁর পিতৃ নিবাসে চলে যান, এখানে উঁনি আর কাজের লোক শাহ আলম ছাড়া কেউ থাকে না, শাহ আলম উঁনার ব্যক্তিগত গাড়ি চালকও বটে। দক্ষিণ মৈশুন্ডির এই ছোট দুইতলা বাড়ির সামনে পেছনে পাঁচ কাঠা করে মোট দশ কাঠা জায়গা খালি, মাঝে মন্দিরের মত পাকিস্তান আমলের পুরোনো হিন্দু বাড়ি, ৪৭ এর দাঙ্গার সময় ভয়াবহতার শিকার কিংবা দাঙ্গার উত্তাপ আঁচ করা হরিদাস শীল মোহাম্মদ শহীদুল হক সাবের বাবা মোহাম্মদ জহিরুল হক সাবকে নাম মাত্র টাকায় হস্তান্তর করে পাশের কোন দেশে চলে যান। মোহাম্মদ শহীদুল হক সাবের পিতা-মাতা মারা যাওয়ার পরই একমাত্র ছোটবোন বিদেশে স্বামীর সাথে চলে যান আর মুক্তিযুদ্ধে পায়ে গুলি খাওয়া বড় ভাই ক্যান্সারে মারা যান। অকৃতদার দুই ভাইয়েরই সন্ন্যাসী মনঃবৃত্তির কারণে এই বাড়িতে আর নতুন কোন ইট যোগ হয়নি, এমনকি বাড়িতে এলাকার দুধওয়ালা, পত্রিকাওয়ালা ছাড়া তেমন কেউই আসেনা।  

মোহাম্মদ শহীদুল হক সাবকে প্রায়ই তার দুঃসম্পর্কের এক মামা ফোন করেন,ল্যান্ড লাইন বেজেই চলে, শহীদুল হক সাব জানেন এই সময় বেলাল মামার ফোন করার সময়, উঁনি আস্তে ধীরে চা শেষ করেন, শাহ আলম চারপাশ দিয়ে ঘুরঘুর করে, বলে উঠে-'ধরেন না কেলা, মামায় ফোন দিছে, খবর পায়া গেছে মনে কয়'। কিসের খবর তা মোহাম্মদ শহীদুল হক সাব জানেন, কিন্তু এই ব্যাপারে আলোচনা করতে উঁনার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নাই । তারপরও ফোনের রিসিভার উঠান-'হ্যালো'...

-তোমগো এলাকায় নাকি গ্যাঞ্জাম লাগছে? বাড়িঘর নাকি সব পুইড়া গেছে?
-না মামা খুব বড় কিছু হয়নি, ঠিক হয়ে গিয়েছে, পুলিশ এসেছিল
-তো তুমি যে সচিব মানুষ, এত বড় অফিসার থাক, এই রকম ঘটনা ঘটে ক্যামতে? দেখবার পারো না একটু, এলাকায় তো তোমারে লোকে এক্টুও ডরায় না।
-মামা, আমি যে মন্ত্রনালয়ে কাজ করি তাতে তো কোন ক্ষমতা নাই, এগুলো দেখাও আমার কাজ না।
-হ যাই হোক, এই শুক্রবারে আয়া পইড় আমগো বাড়িত, তোমার আব্বার নামে মিলাদ রাখছি, তোমারা তো এইডি মানো না , আমরা উঁনার মৃত্যুবার্ষিকী পালন করি, মিলাদ পড়ি, বাপের মৃত্যুবার্ষিকীর কথা মনে আছে নাকি ভুইল্যা গেছ?
-জ্বী মামা মনে আছে, অবশ্যই আসব, দোয়া করবেন , এখন রাখব, মাত্র অফিস থেকে আসলাম।

ফোন রেখে মোহাম্মদ শহীদুল হক সাব চা শেষ করেন, বেলাল মামার এই ধরণের কথা বার্তার পর উঁনার আরেক কাপ চা খেতে ইচ্ছা হয় , সাথে একটা সিগারেট, উঁনি শাহ আলমকে আরেক কাপ চা দিতে বলবেন কিনা তা নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগেন কিংবা ভাবেন এই সাময়িক উত্তেজনা অথবা রাগ উঁনার আরো স্বাভাবিকভাবে অবদমন করা উচিত, হয়তো উঁনি এতটা রাগতেনও না, কিন্তু অভ্যাসবশত বেলাল মামা আর মোহাম্মদ শহীদুল হক সাবের এই ধরণের কথকপনের পর শাহ আলম স্বউদ্যোগী হয়েই চা বানি নিয়ে আসে, প্যাকেট থেকে মোহাম্মদ শহীদুল হক সাব একটা সিগারেট ধরান। 

হঠাৎ করেই মোহাম্মদ শহীদুল হক সাব একটা নাম্বার ঘুরান ফোনে, ঊঁনার নাম্বারের সাথে মিল রেখে শেষ সংখ্যাটা বদলে ফেলেন। এই খেলাটা উঁনি প্রায়ই খেলেন, শাহ আলম যখন চা দিয়ে যায়, উঁনি চা খান আর খেলেন। এই খেলাটা কিছুটা উঁনার পত্রিকার শব্দ মেলানোর খেলার মত মনে হয়। এবার অপর প্রান্ত থেকে কর্কশ কন্ঠ হ্যালো বলে উঠে, উঁনি- এটা কি ফায়ার সার্ভিস বলে জিজ্ঞাস করেন, অপরপ্রান্ত হয়তো এতে বিভ্রান্ত হয় কিংবা মোহাম্মদ শহীদুল হক সাবকে বিভ্রান্ত করার জন্য বলে উঠে-হ্যাঁ,এটা ফায়ার সার্ভিস। কিংবা অপরপ্রান্ত মোহাম্মদ শহীদুল হক সাবের মতই নিঃসঙ্গ , সে হয়তো ফোন হাতে নিয়ে বসে, চা খায়, সিগারেট ফুঁকে আর একই ধরণের খেলাটা খেলতে পছন্দ করেন । কিংবা এটা সত্যি সত্যিই ফায়ার সার্ভিস, একটা দল ইউনিফর্ম পড়ে সদা তৈরী আগুন নেভানোর কাজে। মোহাম্মদ শহীদুল হক সাব ফোনের লাইন কেঁটে আবার আরেকটা নাম্বারে ফোন করেন, এবার ভেসে আসে মিষ্টি নারী কন্ঠ, স্পষ্ট অথচ কোমল কন্ঠে বলে উঠে-হ্যালো। যেন সদ্য একটা গোলাপ ফুটল অথবা এই মেয়েটি মাত্রই ঘুম থেকে উঠেছে। মোহাম্মদ শহীদুল হক সাব বিভ্রান্ত হন, কিংবা বুঝার চেষ্টা করেন এই নারী কন্ঠের বয়স। তিনি আবার হ্যালো বলতেই ওপাশ থেকে বলে উঠেন-হ্যাঁ,কে বলছেন। স্পষ্ট,দৃঢ় এই কন্ঠে মোহাম্মদ শহীদুল হক ঘাবড়ে যান অথবা তিনি ভাবেন এতটা ব্যক্তিত্ববান কারো সাথে ঠিক কী বলে তার কথপকথন শুরু করা উচিত অথবা তিনি যদি কথা বলেনই তবে কী বলবেন, কিংবা এতে কী অপরপাশের মৃদু প্রশ্রয় পাওয়া যাবে। এসব ভাবতে ভাবতে মোহামদ শহীদুল হক বলে বসেন-আপনার কন্ঠ ভীষণ অন্যরকম!
-ধন্যবাদ, কিন্তু বললেন না কিন্তু আপনি কে বলছেন?
-তা কি আপনার জানতেই হবে? পরিচয়টা কি এই ফোনে খুব গুরুত্ব বহন করে?
-হ্যাঁ গুরুত্ব বহন করে, যদি আপনি এই কথপকথন এগিয়ে নিতে চান, তাই নয়নি?
আমরা কিন্তু এখনই কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারব না, কিংবা এটা কি খুব প্রাথমিক ব্যাপার না যে আমি কাকে চাচ্ছি, মূল দ্বন্দ্ব হচ্ছে আপনি স্বস্তি পাচ্ছেন কিনা ? 

বলেই মোহাম্মদ শহীদুল হক সাব আরেকটা সিগারেট ধরান। আপর পাশ থেকে ম্যাচ জ্বালানোর হিশসস...শব্দে সজাগ হয়ে উঠার একটা আবহাওয়া লক্ষ্য করা যায়।
-' আপনি কি আমাকে স্বস্তি দেয়ার জন্য সিগারেট ধরালেন, জনাব হক?
- আমার পদবী কি অনুমান করে বললেন?
-কিছুটা অনুমান করলাম, এই দেখেন সত্যি হয়ে গেল, এখন কী বলবেন যে আপনার নামের প্রথম অংশে মোহাম্মদ আছে?
-হ্যাঁ আছে, এবং আমি বিশ্বাস করি এটা কাকতালীয়, আপনার অনুমান শক্তি সত্যিই প্রখর।
-আপনি নিশচয়ই বলবেন না যে,আপনার নাম শহীদুল, মোহাম্মদ শহীদুল হক?

মোহাম্মদ শহীদুল হক সাব ঘামতে থাকেন, অথবা এটা শুধু আজকের ভ্যাপসা গরমের কারণেই হতে পারে, ফোনের অপরপক্ষের এই অনুমান -অনুমান খেলা ঠিক কতদূর এগোবে তা মোহাম্মদ শহীদুল হক সাব আঁচ করতে পারেন না, তিনি আবারও বিভ্রান্ত হন কিংবা বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুমান করেন । 
-আপনার অনুমান এবারও মিলে গেছে, আচ্ছা আপনি কি মাত্র ঘুম থেকে উঠলেন?
-'এবার কি আপনি আমাকেই চমকে দিতে চাচ্ছেন? না, আমি এই ভর সন্ধ্যায় ঘুমাই না । এটা আমার একান্ত নিজের,শুধু নিজের একটা সময়, আমি মাত্র একটা কবিতা পড়ছিলাম।' চায়ের কাপ সাইড টেবিলে রাখার শব্দ হয়। -'বলুন কার কবিতা পড়ছিলাম?'

মোহাম্মদ শহীদুল হক সাব ঘামতে থাকেন, এরকম চাপ তিনি কখনোই বোধ করেন না, কিংবা আবারো বিভ্রান্ত হন,যেমনটা উঁনার চরিত্রে অনুপস্থিত। 
-'আপনি জয় গোস্বামী'র কবিতা পড়ছিলেন, আমার জয় গোস্বামী ভালই লাগে।
-এতটা আত্মবিশ্বাস থাকা বোধহয় ভাল না, আচ্ছা বলুন তো জয় গোস্বামী'র কবিতার বই আবার কবে বেরুচ্ছে?
-সেইদিন পড়ছিলাম উঁনার ইন্টারভিউ, সামনের মাসেই বের হওয়ার কথা।
-আচ্ছা, জনাব হক, আপনি নিশ্চয়ই সকারি চাকুরে, সকালে খালি পেটে বাংলা ফাইভ ধরান আবার ধরেন আপনি নিঃসঙ্গ কিংবা পরিবার ছাড়া।
-এটা অনুমান করা খুবই সহজ, আমার স্ত্রী-পরিবার থাকলে এই ভর সন্ধ্যায় অচেনা নাম্বারে নিশ্চয়ই ফোন করতাম না। 
- তা ঠিক, 
-কিন্তু খালি পেটে সিগারেট খাওয়া কিংবা সরকারি চাকরি?
-ঐ যে, আপনার ফোন ছাড়ার কোন তাগিদ নেই, সরকারি ফোন, আর খালি পেটে সিগারেট তা তো  সব পুরুষেরই মহান হবি!
-আচ্ছা আপনার ঘরের সাথে খোলা বারান্দা, তাতে ডালিয়া গাছ?
-হ্যাঁ, এই সময়ে ডালিয়া ফুঁটে না কিন্তু পাশের জবা গাছে রক্ত জবা।
-কিংবা আপনার চায়ের সাথে ছিল আলুর চপ।
-আপনার চা কিন্তু ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে।
-আজ রাখি
-আচ্ছা। 

মোহাম্মদ শহীদুল হক সাব ভাবেন এটা কি আদৌ সম্ভব, দুজনকে দুজন এতো জানেন, এতো সহজ অনুমান কিন্তু আজ প্রথম কথা বলা। মোহাম্মদ শহীদুল হক আবার নাম্বার ঘুরান, লাইন বন্ধ, আবার চেষ্টা করেন, চেষ্টা করতে থাকেন। কিন্তু একবারও আর ঐ নাম্বারে ফোন যায়না। মোহাম্মদ শহীদুল হক সাব বিভ্রান্ত হন, এই সময় কেন ডালিয়া ফুঁটে না তা ভাবতে থাকেন। রাতের আকাশে তারা বাড়তে থাকে, চাঁদের আলো কমে আসে, একদল মেঘ ঢেকে দেয় চাঁদটাকে, জয় গোস্বামীর একটা কবিতা মনে করার চেষ্টা করেন। 

"একদিন আমার শরীর ছিল তরুণ পাতায় ভরা
আর আমার আঙুল ছিল লম্বা সাদা বকফুল
আমার চুল ছিল একঝাক ধূসর রঙের মেঘ
হাওয়া এলেই যেখানে খুশি উড়ে যাবে,কেবল সেইজন্য-
একদিন মাঠের পর মাঠে আমি ছিলাম বিছিয়ে রাখা ঘাস
তুমি এসে শরীর ঢেলে দেবে,কেবল সেইজন্য-
আর সমস্ত  নিষেধের বাইরে ছিল
আমার দুটো চোখ
এ নদী থেকে ও  নদী থেকে সেই সে নদীতে
কেবলই ভেসে বেড়াতো তারা "


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ট্রলার

পান চিবাইতে চিবাইতে আব্দুর রহমান বাড়ি ফিরে। দুপুরে খাবারের পর সে নিয়ম করে ঘর থেকে বাইর হয়, তা যতই বৃষ্টি হোক কিংবা ঠাডা পড়া রোদই হোক না কেন, রশিদের দোকান থেকে সে পান কিনে, হালকা জর্দা দেয়া, একটু চুন সাথে সুপারি দেয়া অর্ধেক পান খাবে সে এবং শেষ পিকটা ফেলবে সে তার বাড়ির দরজার পাশের দেয়ালে আর এভাবেই ঐ দেয়ালটার নিচের সম্পূর্ণ অংশ সবসময় লাল হয়ে থাকে। আব্দুর রহমান চল্লিশোর্ধ্ব, কোন কারনে সে এলাকায় গরুর ব্যাপারী হিসেবে পরিচিত, তাকে সবাই আব্দুর রহমান বেপারী ডাকে, তবে লোকে তাকে কেন গরুর ব্যাপারী ভাবে সে আজো ঠাওর করতে পারেনা, কোনদিন ঘোর লাগা এক বর্ষার রাতে সে কলিমুদ্দি ব্যাপারীর সাথে তাস খেলতে খেলতে হয়তো গরুর বেপার নিয়ে দুই একটা কথা বলছিল তাতেই কি লোক তাকে ব্যাপারী নাম দিল নাকি তা নিয়ে সে প্রায়ই ভাবে এবং ভাবতে ভাবতে কোন কুল কিনারা না করতে পেরে মাছের ট্রলার আজো কেন ফিরল না সেটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়। আব্দুর রহমানের আসল কাজ মিয়া বাড়ির আটটা ট্রলার দেখা শোনা করা, এবং এই এলাকায় যে আর কারো দুই একটার বেশি ট্রলার সে বাড়তে দেয়না এইটা জানার কারণে মিয়া বাড়ির বড় মিয়া তাকে বেশ স্নেহ করে আর এই স্নেহ মাঝে মধ্যে বাড়

দক্ষিণ মৈশুন্ডি কিংবা ভূতের গলিতে আমরা কয়েকজন একা একা মানবেরা (5)

৫। ভাদাইম্যা মিজান শেফালিকে দূর থেকে দেখে মকবুলের মা , কাছে আসতেই বলে -‘ উদলা হয়া গেছিলা কই ? মাইয়্যা মানুস ঘোমটা ছাড়া ঘর থন বাইর হয় নিকি ?’ শেফালি বিব্রত হয় , ভুলে যায় শাশুড়ির কথা । মকবুলের মা বলে উঠে -‘ তোমার চলন বলন আরো ঠিক কর বউ , আমার পোলা সামনের বছর হজ্বে যাইব নিয়ত করছে , হাজ্বি সাবের বিবি তুমি , ঠিক কইছি না !’ শেফালি ঘাড় নেড়ে সম্মতি দেয় । আসলেই শেফালি তো এখন সাহেরা আপার বান্ধা কাজের মেয়ে না , এই বাড়ির বউ । মকবুল এই এলাকার নামিদামি মানুষদের একজন । সে প্রথম প্রথম বুঝতে পারে নাই , এখন যখন আসে পাশে যায় , প্রতিবেশিদের সাথে মিশে তখন জানতে পারে সবাই , বিশেষ করে কসাইভিটা , লালবাগ , জিঞ্জিরা এলাকার লোক মকবুলকে কত মান্য করে । কসাইভিটার প্রত্যেক ঘরে ঘরে মকবুলের কৃতজ্ঞতার জন্য দোয়া করা হয় , ঘরে ঘরে মকবুলের দেয়া কিছু না কিছু থাকে । শেফালি শুনে আর অবাক হয় , নিজেকে ভাগ্যবান ভাবে । আমি ভাদাইম্যা মিজান , সারাদিন টো টো কইরা ঘুরি দেইখা আমার এই নাম । পুরা দক্ষিণ মৈশুন্ডি আর ভূতের গলিতে আমারে সবাই চিনে এই নামে । আমার এই নামের পেছনে যদিও কোন তাৎপর্য নাই কিন্তু তারপরও লোকে ব্যাখ্য