সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমাদের ব্যক্তিগত দুঃখ

আমরা যার যার ব্যক্তিগত দুঃখ আড়াল করি,
'আড়ালের' আড়ালে করি হাসাহাসি,
তুমি যাও অন্য প্রান্তে, পাঁচিল টপকে
অন্যকারো সাথে করো ভালবাসাবাসি।

তুমি এসেছিলে শুনে ভাল লাগল।
আমরা হেঁটেছিলাম কিছু দূর,
একসাথে,কিন্তু আলাদা পথে।
তুমি গিয়েছিলে বাড়ি,আমি অচিনপুর।


আমরা সারারাত জাগতাম,ভাবতাম মহাকালের গল্প
তুমি ছিলে অন্ধকারে, আমার ঘরে আলো জ্বলত
দিনশেষে। হই হুল্লোর, মিছিলের পরে ক্লান্ত-
আমি শোনাতাম বিরহগাঁথা,তবুও তা ছিল অল্প।

আমার ব্যক্তিগত দুঃখ আর্জেন্টিনা হয়ে কিউবা
কখনো কাশ্মীর ভ্রমন করত,
তোমার ইশ করা আফসোসগুলো হয়তো
বদ্ধ ঘরেই পায়চারা করত।

তোমার ব্যক্তিগত দুঃখ ছিল দ্বন্দ্বমূলক,
আমারটা বৈজ্ঞানিক যৌথ খামার।
দিনশেষে ফসল ফলাতাম
সবশেষের ভুল শোধরাতাম।

পড়ন্ত বিকেলের আবছা রোদ হয়ে হয়তো
তোমার গালে পড়া হতো না,
তবে তাতে কি , রাস্তার নিচু সারির সামান্য লোকেরা
ভয় কি পেতে পারেনা!

মাঝদুপুরে কবিতা লিখতাম, লিখতাম হাহাকার
ভরদুপুরের স্লোগান ছিল , ছিল অনাহার।
তবুও আমরা আলাপ করতাম আমাদের ব্যক্তিগত দুঃখে,
বলিভিয়া থেকে সোভিয়েত হয়ে জমত কান্না বুকে।

আমাদের ব্যক্তিগত সৈকত ছিল, মাছেরা স্নান করত।
শামুক-ঝিনুক, পিপাসার্ত বেদুঈন ডুব মারত।
দুপুর রাতের কুয়াশা বালু ভেজাত
শীতের পাখি ভ্রমনকারী কান্নারত। 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ট্রলার

পান চিবাইতে চিবাইতে আব্দুর রহমান বাড়ি ফিরে। দুপুরে খাবারের পর সে নিয়ম করে ঘর থেকে বাইর হয়, তা যতই বৃষ্টি হোক কিংবা ঠাডা পড়া রোদই হোক না কেন, রশিদের দোকান থেকে সে পান কিনে, হালকা জর্দা দেয়া, একটু চুন সাথে সুপারি দেয়া অর্ধেক পান খাবে সে এবং শেষ পিকটা ফেলবে সে তার বাড়ির দরজার পাশের দেয়ালে আর এভাবেই ঐ দেয়ালটার নিচের সম্পূর্ণ অংশ সবসময় লাল হয়ে থাকে। আব্দুর রহমান চল্লিশোর্ধ্ব, কোন কারনে সে এলাকায় গরুর ব্যাপারী হিসেবে পরিচিত, তাকে সবাই আব্দুর রহমান বেপারী ডাকে, তবে লোকে তাকে কেন গরুর ব্যাপারী ভাবে সে আজো ঠাওর করতে পারেনা, কোনদিন ঘোর লাগা এক বর্ষার রাতে সে কলিমুদ্দি ব্যাপারীর সাথে তাস খেলতে খেলতে হয়তো গরুর বেপার নিয়ে দুই একটা কথা বলছিল তাতেই কি লোক তাকে ব্যাপারী নাম দিল নাকি তা নিয়ে সে প্রায়ই ভাবে এবং ভাবতে ভাবতে কোন কুল কিনারা না করতে পেরে মাছের ট্রলার আজো কেন ফিরল না সেটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়। আব্দুর রহমানের আসল কাজ মিয়া বাড়ির আটটা ট্রলার দেখা শোনা করা, এবং এই এলাকায় যে আর কারো দুই একটার বেশি ট্রলার সে বাড়তে দেয়না এইটা জানার কারণে মিয়া বাড়ির বড় মিয়া তাকে বেশ স্নেহ করে আর এই স্নেহ মাঝে মধ্যে বাড়

দক্ষিণ মৈশুন্দি কিংবা ভূতের গলিতে মোহাম্মদ শহীদুল হক সাবের সাথে (3)

কোথায় পাব তারে  মোহাম্মদ শহীদুল হক সাব ৯-৫টা চাকরি করেন। ৫টার একমিনিটও বেশি সময় তিনি অফিসে দিতে চান না,যদিনা কেউ তার বিপরীত পাশের চেয়ারে বসে না থাকে। উঁনার বিভাগের উঁনি উর্ধ্বতন কর্মকর্তা হওয়ায় কাজের গতি ও সময় নির্ধারণ উঁনার হাতেই বর্তায়। আমরা বলতে পারি এই ৯-৫টার মধ্যকার এক ঘন্টা সময়ও উঁনি নষ্ট করেন না, বাইরের অনাকাঙ্খিত কেউ আসলে প্রবেশমুখে পিওন আঁটকে দেয়, বলে দেয় স্যার অফিসে নেই। এটা মোহাম্মদ শহীদুল হক সাব ইচ্ছা করেই করেন; না বলে আমরা বলতে পারি এটা তার অভিজ্ঞতা ও পেশা গত দক্ষতা যে উঁনি উটকো লোক এড়িয়ে চলতে পারেন, আর যেহেতু সরকারি চাকরি তাই এখানে ভোক্তা সন্তুষ্টি বা আম জনতার সাথে সম্পর্ক রাখারও কিছু নেই, প্রাইভেট কোম্পানিতে যেভাবে ক্লায়েন্ট সার্ভিস বা অন্যান্য যোগাযোগ মেনে চলার একটা দায় বর্তায়, সরকারি চাকরিতে এসব থাকে না। প্রতি সোম  আর বুধবার মন্ত্রী মহোদয়ের সাথে বিভাগীয় প্রধান, সচিবসহ অন্যান্যরা মিটিং করেন রুটিন অনুযায়ী।  মোহাম্মদ শহীদুল হক সাব সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে তাঁর পিতৃ নিবাসে চলে যান, এখানে উঁনি আর কাজের লোক শাহ আলম ছাড়া কেউ থাকে না, শাহ আলম উঁনার ব্যক্তিগত গাড়ি চালকও বট

বেদখল

আমাগো বাড়ি দখল হয়া গেছে, আমগো বাড়ির চারপাশে এখন বাউন্ডারি বয়া গেছে। আমগো কইছিল হুমুন্দির পুত-'বাড়ি ছাড় নইলে লাস ফালায় দিমু' আমরা ক্যাচাল করি নাইকা, আমরা কইছিলাম- সময় দেন, আপসেই সইড়া যামু। আমগো সময় দেই নাইকা, আমরা আসমানের নিচে হুই, আমগো কেউ কয় আমরা ছিন্নমূল, কেউ কয় আবে বস্তিত গিয়া থাক,ঐ। আমরা মাথা নাড়াই, ভেজালের কারবার করিনা, আমার পোলা স্মাগলার, নইলে কিলার-শ্যুটার হইব, ভয় পায়না। আমগো বাড়ি দখল কইরা দেন, আমি আপনার শত্রুরে মাইরা দিমু, আমগো পোলাপাইন পড়া লেহা করব, ওগো মানুস বানামু।