সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

নিষিদ্ধ দেশপ্রেম / সায়েম চৌধুরী


নীলাভ,দুগ্ধ ফেনিত আকাশে কালো মেঘের দাপট

কালোর দাপটে গমগম করে ওঠে আকাশ,

চিৎকার করে মেঘরাজি।

রাজপথে ব্যস্ত ও বিলাসী গাড়ি,

কালো পিচে রক্তের ছোঁপছোঁপ দাগ

একটু আগে পোঁড়ানো কুশপুতুল

বাউলের ক্ষেতের আল দিয়ে হেঁটে বেড়ানো

সেখানে অনাদর,কান্না আর ক্ষোভের চাদর বিছানো।

পাঠশালায় শিশুদের নিষ্পাপ স্বর-অ আ ক খ

আর পেছনে হাঁটা শিক্ষা মন্ত্রনালয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ে আধুনিক শিক্ষার বুলি ও পিপিপির মর্যাদা
অতঃপর কয়েকটি মিছিল,আন্দোলনের স্ফুলিঙ্গ

ভিসি মহোদয়ের এক চোখ বোঁজা

এবং ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের রাজত্ব

বিশবিদ্যালয়ে প্রেসক্লাবের অপ্রয়োজনীয়তা বোঝার পর ছাত্র বহিষ্কার

মানচিত্রের চারপাশে ফেলানীর ঝুলন্ত লাশ

রাষ্ট্রমন্ত্রীর কথা শোনায় পিতৃত্ব অস্বীকারকারী বাবার মতোই

প্রতিবেশীর ক্ষমা ও বুদ্ধিজীবীর কালি হ্রাস।

নিরাপত্তা বাহিনীর শত্রু চিহ্নিতকরণ

দরিদ্র কলেজছাত্রের পঙ্গুত্ববরণ

এরপর মশা মারতে কামানের দৃশ্য।

রাষ্ট্রের মেরুদন্ডে ব্যাথা

গোঁদের ওপর বিষফোঁড়া- রাষ্ট্রের ধর্ম ইসলাম

সংবিধানের জারজ সন্তান বিসমিল্লাহ

সাথে আরো কয়েকজন সং শাসক হাসে মুখ টিপে।

শশ্রু মন্ডিত ধর্মরক্ষাকারীর মিছিল বিক্ষোভ

ধর্মগুরুর ফতোয়া জারি ও

অবুঝ ছাত্রের বুকে বাঁধা পবিত্র কুরআন শরীফ

পুলিশের হাত কাপে তবুও জ্ঞান আসে না হুজুরের

সুতি পাঞ্জাবি পড়া উপদেষ্টা আমাদের সান্তনা দেয়

বলে ওঠে-এলাহি ভরসা

বঙ্গপসাগরের বাঁধভাঙা যৌবন

লম্পটের লোভাতুর চোখ

বাবার ভূমিকায় এগিয়ে আসেন একজন অধ্যাপক,

রক্ত ঝরে তারও।

দেশমাতার গর্ভে জন্ম নেয়া দুই ভাই-

লম্পট এলাহি ভরসা ও বাবাটি অবতীর্ণ হয় দুই ভূমিকায়

আবার একদিকে শীতল বিলাসি ও দামি বেসরকারি হাসপাতাল

অন্যদিকে ঢাকা মেডিকেল-

বৈষম্যের বিনিদ্র রক্তচক্ষু

দুই চোখে প্রাচ্যের অক্সফোর্ডে পড়ার স্বপ্ন দেখছে কিছু ছেলেমেয়ে

যাদের শিক্ষক স্বামীর পাশবিকতায় চোখই খুলতে পারছে না।

অলিখিত নিরাপত্তার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ স্বামী আজ হন্তারকের ভূমিকায়।

আরেকদিকে দেখা যায় মমতাময়ী মাকে

যার মেয়ে ইভটিজিংয়ের ফলে আত্মহত্যা করে।

আরেক মায়ের ওপর ঊঠে যায় বখাটের মোটর সাইকেল

জীবিত একজন শিল্পী পায় অবহেলা

মৃত্যুর পর মরনোত্তর একুশে পদক

বাইশ পরিবার হটে আজ বাইশ হাজার পরিবার

যাদের পদ লেহনে ব্যস্ত শাসকেরা

নগরীর বিলাসবহুল পাঁচ তারকা

ভেতরে একই সাথে মানানসই পতিতা

যাকে ভোগ করে ক্ষুধা মেটে সবার

তার ক্ষুধার খবর তো নেয় না রাষ্ট্রপতি মহোদয়!

দরবেশের ক্ষুধা লাগে তাই চুটকিতেই নিঃস্ব হাজার বিনিয়োগকারী

আরো খাবে কিনা শুধায় তদন্তকারী

যারা ফার্স্ট ক্লাস নাগরিক তারা ভোগ করে সকল সুবিধা

অন্নদাতা কৃষক পল্লীবিদ্যুতও পায়না

করমুক্ত বিলাসি গাড়িতে জনপ্রতিনিধি

আর লোকাল বাসে ঝুলে বেড়ায় ঘর্মাক্ত ভোটার।

জয় বাংলা,

বাংলাদেশ জিন্দাবাদ

পাক সার জমিন সাদ বাদ

আর পল্লীবন্ধুর জাঁতাকলে

বাংলা মায়ের নাভিশ্বাস ওঠে।

সায়েম

১৬/৬/১১ , সিলেট

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

বেদখল

আমাগো বাড়ি দখল হয়া গেছে, আমগো বাড়ির চারপাশে এখন বাউন্ডারি বয়া গেছে। আমগো কইছিল হুমুন্দির পুত-'বাড়ি ছাড় নইলে লাস ফালায় দিমু' আমরা ক্যাচাল করি নাইকা, আমরা কইছিলাম- সময় দেন, আপসেই সইড়া যামু। আমগো সময় দেই নাইকা, আমরা আসমানের নিচে হুই, আমগো কেউ কয় আমরা ছিন্নমূল, কেউ কয় আবে বস্তিত গিয়া থাক,ঐ। আমরা মাথা নাড়াই, ভেজালের কারবার করিনা, আমার পোলা স্মাগলার, নইলে কিলার-শ্যুটার হইব, ভয় পায়না। আমগো বাড়ি দখল কইরা দেন, আমি আপনার শত্রুরে মাইরা দিমু, আমগো পোলাপাইন পড়া লেহা করব, ওগো মানুস বানামু।

দৃষ্টি এবং ইচ্ছের দেবতার প্রতি প্রশ্ন

যখন দৃষ্টি সীমানা ছাড়িয়ে বহুদূর যেতে চায় তখন কেন জানি আচমকা চোখ ফিরিয়ে নেই। আমার দৃষ্টি কী ক্ষীণ? আমার দৃষ্টি কী ভীরূ? নাকি আমার ইচ্ছের দেবতা আমার দৃষ্টিকে আর যেতে দেয় না? ইচ্ছের দেবতা কী আর সাহস পায় না? প্রগাঢ় লজ্জায় দেবতা আমায় বলে “দৃষ্টিরও একটা সীমা মানতে হয়,কখনোই দৃষ্টিকে সীমাহীন হতে দেব না”। এই দেবতার নাম নাকি ইচ্ছে দেবতা! সমাজের সুশীল সমাজের বাইরের মানুষরা তাই গালি দেয়- উদ্দেশ্য এই ‘ইচ্ছে দেবতা’,আর সুশীলরা দার্শনিক তত্ত্ব প্রকাশ করেন! ইচ্ছের দেবতা কে আমার প্রশ্ন-“ তোমায় দেবতা বানালো কে?আমি না আমরা? নাকি মহামতি ঈশ্বর? নাকি আমাদের সমাজ তোমায় পঙ্গু করলো”?

ট্রলার

পান চিবাইতে চিবাইতে আব্দুর রহমান বাড়ি ফিরে। দুপুরে খাবারের পর সে নিয়ম করে ঘর থেকে বাইর হয়, তা যতই বৃষ্টি হোক কিংবা ঠাডা পড়া রোদই হোক না কেন, রশিদের দোকান থেকে সে পান কিনে, হালকা জর্দা দেয়া, একটু চুন সাথে সুপারি দেয়া অর্ধেক পান খাবে সে এবং শেষ পিকটা ফেলবে সে তার বাড়ির দরজার পাশের দেয়ালে আর এভাবেই ঐ দেয়ালটার নিচের সম্পূর্ণ অংশ সবসময় লাল হয়ে থাকে। আব্দুর রহমান চল্লিশোর্ধ্ব, কোন কারনে সে এলাকায় গরুর ব্যাপারী হিসেবে পরিচিত, তাকে সবাই আব্দুর রহমান বেপারী ডাকে, তবে লোকে তাকে কেন গরুর ব্যাপারী ভাবে সে আজো ঠাওর করতে পারেনা, কোনদিন ঘোর লাগা এক বর্ষার রাতে সে কলিমুদ্দি ব্যাপারীর সাথে তাস খেলতে খেলতে হয়তো গরুর বেপার নিয়ে দুই একটা কথা বলছিল তাতেই কি লোক তাকে ব্যাপারী নাম দিল নাকি তা নিয়ে সে প্রায়ই ভাবে এবং ভাবতে ভাবতে কোন কুল কিনারা না করতে পেরে মাছের ট্রলার আজো কেন ফিরল না সেটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়। আব্দুর রহমানের আসল কাজ মিয়া বাড়ির আটটা ট্রলার দেখা শোনা করা, এবং এই এলাকায় যে আর কারো দুই একটার বেশি ট্রলার সে বাড়তে দেয়না এইটা জানার কারণে মিয়া বাড়ির বড় মিয়া তাকে বেশ স্নেহ করে আর এই স্নেহ মাঝে মধ্যে বাড়...