সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

বেদখল

আমাগো বাড়ি দখল হয়া গেছে, আমগো বাড়ির চারপাশে এখন বাউন্ডারি বয়া গেছে। আমগো কইছিল হুমুন্দির পুত-'বাড়ি ছাড় নইলে লাস ফালায় দিমু' আমরা ক্যাচাল করি নাইকা, আমরা কইছিলাম- সময় দেন, আপসেই সইড়া যামু। আমগো সময় দেই নাইকা, আমরা আসমানের নিচে হুই, আমগো কেউ কয় আমরা ছিন্নমূল, কেউ কয় আবে বস্তিত গিয়া থাক,ঐ। আমরা মাথা নাড়াই, ভেজালের কারবার করিনা, আমার পোলা স্মাগলার, নইলে কিলার-শ্যুটার হইব, ভয় পায়না। আমগো বাড়ি দখল কইরা দেন, আমি আপনার শত্রুরে মাইরা দিমু, আমগো পোলাপাইন পড়া লেহা করব, ওগো মানুস বানামু।
সাম্প্রতিক পোস্টগুলি

ট্রলার

পান চিবাইতে চিবাইতে আব্দুর রহমান বাড়ি ফিরে। দুপুরে খাবারের পর সে নিয়ম করে ঘর থেকে বাইর হয়, তা যতই বৃষ্টি হোক কিংবা ঠাডা পড়া রোদই হোক না কেন, রশিদের দোকান থেকে সে পান কিনে, হালকা জর্দা দেয়া, একটু চুন সাথে সুপারি দেয়া অর্ধেক পান খাবে সে এবং শেষ পিকটা ফেলবে সে তার বাড়ির দরজার পাশের দেয়ালে আর এভাবেই ঐ দেয়ালটার নিচের সম্পূর্ণ অংশ সবসময় লাল হয়ে থাকে। আব্দুর রহমান চল্লিশোর্ধ্ব, কোন কারনে সে এলাকায় গরুর ব্যাপারী হিসেবে পরিচিত, তাকে সবাই আব্দুর রহমান বেপারী ডাকে, তবে লোকে তাকে কেন গরুর ব্যাপারী ভাবে সে আজো ঠাওর করতে পারেনা, কোনদিন ঘোর লাগা এক বর্ষার রাতে সে কলিমুদ্দি ব্যাপারীর সাথে তাস খেলতে খেলতে হয়তো গরুর বেপার নিয়ে দুই একটা কথা বলছিল তাতেই কি লোক তাকে ব্যাপারী নাম দিল নাকি তা নিয়ে সে প্রায়ই ভাবে এবং ভাবতে ভাবতে কোন কুল কিনারা না করতে পেরে মাছের ট্রলার আজো কেন ফিরল না সেটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়। আব্দুর রহমানের আসল কাজ মিয়া বাড়ির আটটা ট্রলার দেখা শোনা করা, এবং এই এলাকায় যে আর কারো দুই একটার বেশি ট্রলার সে বাড়তে দেয়না এইটা জানার কারণে মিয়া বাড়ির বড় মিয়া তাকে বেশ স্নেহ করে আর এই স্নেহ মাঝে মধ্যে বাড়

দক্ষিণ মৈশুন্ডি কিংবা ভূতের গলিতে আমরা কয়েকজন একা একা মানবেরা (5)

৫। ভাদাইম্যা মিজান শেফালিকে দূর থেকে দেখে মকবুলের মা , কাছে আসতেই বলে -‘ উদলা হয়া গেছিলা কই ? মাইয়্যা মানুস ঘোমটা ছাড়া ঘর থন বাইর হয় নিকি ?’ শেফালি বিব্রত হয় , ভুলে যায় শাশুড়ির কথা । মকবুলের মা বলে উঠে -‘ তোমার চলন বলন আরো ঠিক কর বউ , আমার পোলা সামনের বছর হজ্বে যাইব নিয়ত করছে , হাজ্বি সাবের বিবি তুমি , ঠিক কইছি না !’ শেফালি ঘাড় নেড়ে সম্মতি দেয় । আসলেই শেফালি তো এখন সাহেরা আপার বান্ধা কাজের মেয়ে না , এই বাড়ির বউ । মকবুল এই এলাকার নামিদামি মানুষদের একজন । সে প্রথম প্রথম বুঝতে পারে নাই , এখন যখন আসে পাশে যায় , প্রতিবেশিদের সাথে মিশে তখন জানতে পারে সবাই , বিশেষ করে কসাইভিটা , লালবাগ , জিঞ্জিরা এলাকার লোক মকবুলকে কত মান্য করে । কসাইভিটার প্রত্যেক ঘরে ঘরে মকবুলের কৃতজ্ঞতার জন্য দোয়া করা হয় , ঘরে ঘরে মকবুলের দেয়া কিছু না কিছু থাকে । শেফালি শুনে আর অবাক হয় , নিজেকে ভাগ্যবান ভাবে । আমি ভাদাইম্যা মিজান , সারাদিন টো টো কইরা ঘুরি দেইখা আমার এই নাম । পুরা দক্ষিণ মৈশুন্ডি আর ভূতের গলিতে আমারে সবাই চিনে এই নামে । আমার এই নামের পেছনে যদিও কোন তাৎপর্য নাই কিন্তু তারপরও লোকে ব্যাখ্য

ইন্দুর বিলাইয়ের গল্প

লেখালেখিকে যতটা সহজ ভাবা হয় আসলে তা ততো সহজ নয়। রাইটার্স ব্লক কয়েক দিন , কয়েক মাস , এমনকি কয়েক বছরও যেতে পারে। আবার এমনো হতে পারে এই জীবনে আর লেখা হবে না। ঠিক তেমনটাই হয়েছিল আজিজুল রহীমের সাথে। আমাদের জানামতে আজিজুল রহীম তার ডায়েরীতে সর্বশেষ লিখেছিলেন ১৯৯৭ এ। তখন তার বয়স বত্রিশ। সবে একটি নতুন চাকরিতে প্রবেশ করেছেন কয়েক বছরের পুরোনো পত্রিকা অফিস রেখে। একটি মাঝারি মানের প্রেসের ব্যবস্থাপক হিসেবে। সাড়ে চার বছরের অনিয়মতান্ত্রিক চাকরি ছেড়ে ৯ - ৫ টা অফিস আর শুক্রবার বন্ধ। এ যেন এক বন্দীশালা। তবুও ঠিকঠাক চলছিল ব্যস্ত জীবন আর সংসারের চাপে একটা আলাদিনের জ্বীন ভর করেছিল আজিজুল রহীমের কাঁধে।   আজিজুল রহীম তাঁর এনায়েতগঞ্জের বাসা ছেড়ে উঠেন সেগুনবাগিচায়। নতুন বাসাতে ওঠার পর থেকেই নতুন কিছু উৎপাত শুরু হতে থাকে। এক নম্বর সমস্যা হল ইঁদুর। এবং এই ইঁদুরগুলো সম্ভবত এনায়েতগঞ্জের সেই পুরোনো বাসারই পুরোনো সঙ্গী। আজিজুল রহীম রাত বারটায় যখনই শোয়ার জন্য মশারীর ভেতর ঢুকেন তখনই ইঁদুরগুলা তাঁর তোষক আর খাটের তল দিয়া নড়াচড়া করতে শুরু করে। আর এতে আজিজুল রহীম সাহেবের ঘুমাতে ঘুমাতে রাত তিনটা - চারটা বাজে। এই

দক্ষিণ মৈশুন্দি কিংবা ভূতের গলিতে মোহাম্মদ শহীদুল হক সাবের সাথে (4)

৪। মকবুল কসাইভিটা জামে মসজিদ থেকে জুম্মার নামাজ পড়ে মকবুল বাড়ির দিকে রওনা দেয়, পথিমধ্যে একটা ভ্যানগাড়ি থেকে ‘শরিফা’ কিনে নেয় নতুন বউয়ের জন্য। মকবুল শেপালির ব্যবহারে মুগ্ধ, যেমন রান্না তেমন তার কন্ঠ। মকবুল ভাত খাইতে খাইতে শেপালিরে বলে একটা গান শুনাতে, শেপালি গান শুনায়- তুমি বন্ধু আর এলেনা বিচ্ছেদের পরে, আমি ছিলাম পা ডুবায়ে মাঝ দরিয়াতে, তুমি ছিলা ভিনদেশি তাই খুইজা পাইলাম না, আমি কান্দি দিবা নিশি , কান্দন থামেনা। মকবুল ভাইবা পায় না এই গান সে কোথায় শুনছে নাকি কোনদিনই শুনে নায়,আজই প্রথম। -বউ তুই ভাল গান গাছ, কই হিকছস? শেপালি লজ্জা পায়, শেপালি ভাবে এই গান তার শাশুড়ি পাশের ঘর থিকা শুনলে তারে কিনা কি বলবে ! সে যেহেতু নতুন বউ তাই তাকে আরও কিছুদিন লজ্জা শরম মাইনা চলতে হবে এবং মাথা থিকা ঘোমটা ফালানো যাবেনা, এমনটাই হুকুম শাশুড়ির। মকবুলের মা কড়া মহিলা, মকবুলের বাপ মারা যাওয়ার পর দুই সন্তানকে উনি মানুষ বানাইছেন, মেয়ে এখন বিয়া কইরা স্বামী সোহাগি, ছেলেরে মাত্র বিয়া করাইছেন, বউ মাশাল্লাহ সুন্দরি, গরিব ঘরের, তাতে আরো ভাল হইছে। কথা শুনে, গোলামের স্বভাব একদিকে ভাল, তারা আদব ল্যাহাজ মাইনা চল